পুদিনা পাতার জুস এর উপকারিতা
ভূমিকা । পুদিনা পাতার জুস এর উপকারিতা
অতীতে এমন এক সময় ছিল । যখন কোনো ডাক্তার ছিলনা,কোনো ফার্মেসি ছিলোনা । তখনও
মানুষ রোগে ভুগত,অসুখে পড়ত । আর সেই রোগের চিকিৎসা হতো প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ।
সেই সব প্রাকৃতিক উপাদান এর ভেতর একটি হচ্ছে পুদিনা পাতার রস । পুদিনা পাতার রস
সরাসরি সবাই খেতে পারবে না , এর বিকল্প হচ্ছে পুদিনা পাতার জুস । এই আর্টিকেলে আজ
জানতে পারবেন পুদিনা পাতার জুস এর উপকারিতা সম্পর্কে । লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়লে
আশা করছি আপনি পুদিনা পাতার জুস এর উপকারিতা সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করবেন ।
এই পোস্টে যা যা জানতে পারবেন
- ভূমিকা । পুদিনা পাতার জুস এর উপকারিতা
- পুদিনা পাতার পরিচিতি । পুদিনা জুস
- কেন পুদিনা পাতার জুস খাবেন । মিন্ট জুস
- ব্রন ও দাগ কমাতে পুদিনা জুস এর ব্যাবহার
- পুদিনা জুস : গ্যাসের সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান
- ঠান্ডা জনিত সমস্যা সমাধানে পুদিনা পাতার জুস
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পুদিনা পাতা
- মনকে সতেজ রাখে পুদিনা জুস
- পুদিনা পাতার জুস তৈরির সহজ রেসিপি
- শেষ কথা । পুদিনা ড্রিঙ্ক
পুদিনা পাতার পরিচিতি । পুদিনা জুস
পুদিনা পাতা এক প্রকার এর ঔষুধী গাছ । এর গুনাগুন অনেক । সেই আদিম যুগ থেকে মানুষ
এর ব্যাবহার করে আসছে । যখন কোনো ডাক্তার বা ফার্মেসি ছিল না , তখন প্রাকৃতিক এই
ধরনের ঔষুধী গাছপালা ছিল মানুষের একমাত্র ভরসা। তখন থেকে মানুষ পুদিনা পাতাকে
প্রকৃতির একটা আশীর্বাদ মনে করে।
কেন পুদিনা পাতার জুস খাবেন । মিন্ট জুস
পুদিনা পাতা সরাসরি অনেকে খেতে পারে না। তাই এটা খাওয়ার বিকল্প এবং সহজ উপায়
হচ্ছে পুদিনা পাতার জুস বানিয়ে খাওয়া । এটা যেমন খেতে সুস্বাদু তেমনি এটা শরীরের
জন্য বেশ উপকারী । গরমে পুদিনা পাতার জুস আপনার শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে । এই
জুস আপনি ঘরে বানিয়েও খেতে পারবেন , আবার আপনি আপনার আশে পাশে অনেক স্ট্রিট জুস
বার পাবেন যেখানে এটা মিন্ট জুস নামে পরিচিত ।
ব্রন ও দাগ কমাতে পুদিনা জুস এর ব্যাবহার
পুদিনা পাতায় অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। এর
কারনে পুদিনা পাতার রস মুখের ব্রন, ব্ল্যাক হেডস দূর করতে সাহায্য করে। ত্বক এর
নিস্তেজ,ফাটাভাব কমিয়ে আনে। এবং ত্বক কে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল করে তুলে।
পুদিনা জুস : গ্যাসের সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান
আমরা খেতে খুব ভালবাসি। তাই পেটের নানা সমস্যা আমাদের লেগেই থাকে। এর ভেতর পেটের
গ্যাস এর সমস্যা অন্যতম। পেটে গ্যাস, হজমে সমস্যা, এগুলা প্রতিটা মানুষের ভেতর
বিদ্যমান। পুদিনা পাতার জুস এই সব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি কার্যকরী
সমাধান। নিয়মিত পুদিনা জুস খেলে অম্বল কমতে পারে, পেটে অস্বস্তি ভাব কম অনুভব
হবে, এবং হজমের শক্তিও বাড়বে। এটি খেলে অরুচি বোধ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
ঠান্ডা জনিত সমস্যা সমাধানে পুদিনা পাতার জুস
পুদিনা পাতায় আছে প্রাকৃতিক মেন্থল , যা শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।
সর্দি, কাশি, গলাব্যাথা ও শ্বাসকষ্টে পুদিনা জুস উপকারী ভূমিকা
রাখে। গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা পুদিনার রস দিয়ে গরম পানীর ভাপ নিলে নাক
ও গলা পরিষ্কার হয়ে যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এতে আরো
রয়েছে ভিটামিন বি, ই, সি ও ডি । তাই নিয়মিত পুদিনা পাতার জুস খেলে মানুষের শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এর অ্যান্টি স্পেসমোডিক উপাদান
মেয়েদের পিরিয়ড জনিত ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। পুদিনা পাতার জুস
মানুষের শরীর এর রক্ত কে ডিটক্সিফাই করে ও রক্ত বিশুদ্ধ করে। প্রেগন্যান্ট নারীরা
তাদের মর্নিং সিকনেস থেকে মুক্তি পেতে পুদিনা জুস খেতে পারেন। তবে শিশু জন্মের
পরে পুদিনা পাতা না খাওয়ায় উত্তম, কারন এতে দুগ্ধক্ষরণ হতে পারে।
এর আরো একটি ক্ষমতা হচ্ছে এটি কোলন ক্যান্সার ও ফুসফুসের ক্যান্সারের
ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
মনকে সতেজ রাখে পুদিনা জুস
পুদিনা পাতার সুবাস মস্তিস্ককে শান্ত রাখে, মানসিক সতেজতা নিয়ে আসে। মানসিক চাপ,
হতাশা, ক্লান্তি এবং অনিদ্রা এর সমস্যা দূর করতে পুদিনার জুস অনেক উপকারে আসে।
পুদিনা পাতার মেন্থল মস্তিষ্কের পেশী শিথিল করে মাথা ব্যাথা কমাতে সাহায্য
করে।
পুদিনা পাতার জুস তৈরির সহজ রেসিপি
পুদিনা পাতার জুস সুস্বাদু করে বানানোর জন্য যা যা লাগবে তা নিম্নে দেয়া
হল ঃ
(১) এক কাপ তাজা পুদিনা পাতা
(২) হাফ কাপ ঠাণ্ডা পানি
(৩) হাফ চা চামুচ বিট লবন
(৪) লেবুর রস দুই চা চামুচ
(৫) হাফ চা চামুচ জিরা গুরা
(৬) প্রয়োজনমত চিনি
প্রথমে এক কাপ তাজা পুদিনা পাতা নিয়ে নিতে হবে তারপর হাফ কাপ ঠাণ্ডা
পানি, হাফ চা চামুচ বিট লবন, লেবুর রস দুই চা চামুচ, হাফ চা চামুচ জিরা গুরা,
প্রয়োজনমত চিনি একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ব্লেন্ড
করা হয়ে গেলে একটি গ্লাসে ছাকনি দিয়ে অবশ্যই ছেকে নিতে হবে। তারপর বরফের টুকরা
দিয়ে ঠাণ্ডা পরিবেশন করতে হবে।
উল্লেখিত উপাদান এর ভেতর কোনো কিছু যোগ বা বাদ দিলে প্রয়োজনমত দিতে পারেন।
শেষ কথা । পুদিনা ড্রিঙ্ক
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এইরকম প্রাকৃতিক উপাদান এর কার্যকারিতা অনেক। যদিও পুদিনা
জুস একটি উপকারী উপাদান তবে খেয়াল রাখতে হবে, যেনো এটির ব্যাবহার অতিরিক্ত না হয়।
এতে করে হজম এর সমস্যা ও অ্যালার্জি হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমানে খাওয়াই
ভালো।

ভাইরাল মিন্ট হাবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url